Sunday, December 8, 2019

পশু কুরবানি করার সময় সতর্ক থাকুন!


কুরবানির সময় ভুল করে হত্যা করে পশু কুরবানী করছেন না তো?
একটি ছোট্ট ভুলে বাতিল হয়ে যেতে পারে আপনার কুরবানী।
সকল কুরবানিদাতাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়ঃ
১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে আমাদের করা ছোট্ট একটি ভুলের কারণে সম্পূর্নরূপে বাতিল হয়ে যেতে পারে আমাদের অত্যন্ত যত্নের সাথে আদায়কৃত আল্লাহর মহান হুকুম কুরবানি!
পশু জবেহ সম্পন্ন হবার পর একটি ছোট তীক্ষ্ণ ছুড়ি দিয়ে জবেহের স্থানে খোঁচা দেয়ার একটা সিস্টেমের সাথে আমরা কমবেশি প্রায় সবাই পরিচিত, আমাদের অনেকেরই ধারণা এই কাজটার মাধ্যমে পশু দ্রুত মারা যায় এবং কষ্ট কম পায়।
এই ছোট্ট একটা ভুলই আমাদের কুরবানি বরবাদ করে দেবার জন্য যথেষ্ট!
পশু জবেহ সহীহ হবার শর্ত হলো, পশুর অন্তত মূল তিনটি রগ কেটে দেয়া। আর মূল তিনটি রগ কেটে দিলে, রক্তক্ষরণের স্বাভাবিক ফলস্বরূপ পশুটি খুব দ্রুত মারা যায়।
আমরা একটু অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে, পশুটার মেরুদন্ডের ভেতর তীক্ষ্ণ ছুড়ি ঢুকিয়ে "মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড" বিচ্ছিন্ন করে দ্রুত মেরে ফেলার চেষ্টা করি। স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পশুর মস্তিষ্ক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আর এর ফলে পশুটি হার্ট এ্যাটাক করে এবং দ্রুত মারা যায়।
অনেক সময় এভাবে দ্রুত পশুটিকে শান্ত করতে গিয়ে, কুরবানির উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং পশুটি জবেহ না হয়ে হত্যা হিসেবে পরিগনিত হয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এই পন্থা অত্যন্ত গর্হিত এবং বিপদজনক। স্পাইনাল কর্ড কেঁটে গেলে পশুর দেহের মাংশপেশিতেই রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং ফলশ্রুতিতে গোশত দূষিত হয়ে পরে। এই গোশত ভক্ষণে ক্যান্সার, এইচবিএএস, সহ অন্তত ১৮ প্রকার জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
অতএব, কুরবানিদাতা সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ থাকবে, ১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে দয়া করে আপনার কুরবানিকে বরবাদ হয়ে যাবার সুযোগ দিবেন না।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Tuesday, October 1, 2019

সন্তানের নাম রাখার বিষয়ে সতর্ক হোন!


উত্তরা ক্রিসেন্ট হসপিটালে গিয়েছিলাম গত পরশু। পাশে একজন ব্যক্তি তার অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে বসে আছেন। জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে বাচ্চার? একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, "আর বইলেন না! হওয়ার পর থেকেই একটা না একটা সমস্যা লেগেই আছে। বয়স অক্টোবরে দুই বছর হবে, অথচ দেখেন দেখলে মনে হয়, ৬ মাস।"
বাচ্চার নাম কি, জানতে চাওয়াতে বললেন, "রামিম ফাওযান।"
দেরি হয়ে যাচ্ছিল, তাই এতটুকুই শুধু বললাম, ভাই! ডাক্তার তো অবশ্যই দেখাবেন। কিন্তু “রামিম” নামটাও পাল্টে ফেলেন। এর অর্থ ভাল না। জীর্ণ শীর্ণ, ক্ষয়প্রাপ্ত। কুরআনের সুরা ইয়াসিনে decomposed অর্থে ব্যবহার হয়েছে।
আরেক পরিচিত বোনের ঘটনা এই ফেসবুকেই পড়েছি। তার একমাত্র ছেলে মাত্র চার বছর বয়সে হঠাৎই মারা যায়। বেড়াতে গিয়েছিলেন। সবাই যখন দুপুরের খাবারে ব্যস্ত, ছেলেটি কোন ফাঁকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। রাস্তার পাশে একটি ছোট পুকুরের মত। সেখানেই হঠাৎ করে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তার।
তারা না জেনে তাদের এই ছেলের নাম রেখেছিলেন "তাবীব"। যার একটি অর্থ "ধ্বংসপ্রাপ্ত"। সুরা লাহাবের "তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাব" অায়াতে এই একই অর্থে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে সবরের তাউফিক দিন।
উত্তরা নয় নাম্বার সেক্টরে একটি এপার্টমেন্ট "হাবিতাত বিল্ডারস" কতৃক নির্মিত। হাবিতাত অর্থ ধ্বংস হয়ে যাওয়া। (আল্লাহ তা'অালা হিফাযত করুক)।
নামের একটি প্রতিক্রিয়া আছে, এটি হাদিস দ্বারা প্রমানিত। পাশাপাশি, দুনিয়াতে ব্যবহৃত নামেই আমাদেরকে আখিরাতে ডাকা হবে। খারাপ নাম থাকলে খারাপ নামে, ভাল থাকলে ভাল।
কুরঅানে ব্যবহৃত হলেই কোন শব্দের অর্থ ভাল হয়ে যায় না। কুরঅানে ফিরআউন, হামান, আবু লাহাবের নামও আছে। এসমস্ত নাম কুরঅানের আয়াত হিসেবে পড়লে প্রতি অক্ষরে দশটি করে সাওয়াব পাওয়া যাবে, কিন্তু কারো নাম হিসেবে যে এ শব্দগুলো ভাল নয়, তা তো সবাই বুঝে।
এজন্য কুরঅান বা হাদিসের বই থেকে কোন শব্দ পছন্দ হলেই নাম রেখে না দেয়া। আনকমন নামের পেছনে না পড়া। কোন নির্ভরযোগ্য আলিমের সাথে পরামর্শ করা অবশ্যই জরুরি। গুগল করে বা নামের বই দেখে নিজে নিজে নাম রেখে দেয়াটা অনেক রিস্কি। অনেক নামের ভাল খারাপ দুটো অর্থই থাকে। গুগল বা নামের বই আপনাকে ভাল অর্থটা বলবে,খারাপটা চেপে যাবে। আমাদের পাশের বাসার আপু তার ছেলের নাম এভাবে গুগলে দেখে রেখেছেন "ইহান"। উর্দুতে যার অর্থ "পূর্ণ চন্দ্র", কিন্তু অারবীতে এর অর্থ "অপমানিত/লাঞ্ছিত"।
প্রতিটি বাবা মার মনে রাখা দরকার, সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর তার একটি সুন্দর নাম রাখা তাদের দায়িত্ব। এটা সন্তানের হক। এই হক আদায়ে অবহেলা হলে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
আল্লাহ তা'অালা আমাদের সতর্ক হওয়ার তাউফিক দিন।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Saturday, February 9, 2019

আল্লাহর নাম সংযুক্ত করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম রাখবেন না, জেনে নিন কেন?


আমি নিজের লাইফে রংপুর শহরে দুইটি ছাত্রাবাস দেখেছি যেগুলোর নাম ছিল "আল্লাহর দান" ছাত্রাবাস; যার একটি আছে শহরের ইসলামপুরে এবং আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আশরতপুর এলাকায়। এছাড়াও একটি মাজন কোম্পানির নাম দেখেছি 'আল্লাহর দান মাজন কোম্পানি'।
যারা এরূপ নাম দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন তারা সাধারণত ভেবে থাকেন যে, এতে আল্লাহর রহমত থাকবে ওই প্রতিষ্ঠানের উপর। কিন্তু এটা করা ঠিক হবে না; কেন ঠিক হবে না তা আমি এখন ব্যাখ্যা করবো—
তারা আল্লাহর প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে এটা করে থাকেন, কিন্তু তাদের নিজেদের অজান্তেই এর একটা উল্টো ফল হয়ে বসে থাকে। তা হলো— তারা যখন ভাড়া আদায়ের রশিদ দেন তাতে সেই নাম লেখা থাকে, সেই রশিদ যখন ছেলেরা মেস ছেড়ে আসার সময় ঘর ঝাড়ু দিয়ে ফেলে দেয় তা নোংরা-অপবিত্র জায়গায় পড়ে থাকে। এতে আল্লাহর নামের অবমাননা করা হয়ে যায়। এমনিভাবে এরূপ নামধারী বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ-ম্যামোর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে থাকে। তাই যেসকল ব্যবসায়ী ভাইয়েরা এরূপ কাজ করেছেন তাদেরকে বিষয়টি সংশোধন করার আহবান জানাচ্ছি।
এছাড়াও দেখেছি 'আল্লাহর দান মাজন কোম্পানি'র মাজনের প্যাকেটের মাজন শেষ হওয়ার পর সেই প্যাকেটেরও একই অবস্থা। আমি নিজে দুইদিন সেই প্যাকেট ভালো জায়গায় তুলে রেখেছি, কিন্তু আমি কিংবা গ্রাহকরা তো এটা করার দায়িত্ব নেই নাই। আর সব মানুষ তো আমার মতো করে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে না। আর পারলেও এসব প্যাকেট ভালো স্থানে সংরক্ষণ করা কাজটা অহেতুক ও হাস্যকর হবে; বরং মাজন কোম্পানির উচিৎ হবে এই নাম পরিবর্তন করা।
যেহেতু না বুঝে বা ঠিকমতো দূরদর্শী চিন্তা না করার ফলে এমনটা হয়ে গেছে এ নিয়ে দোষের কিছু নেই, কিন্তু এখন যখন বিষয়টি বুঝলেন এখন এর সমাধানের পদক্ষেপ নিন।

ভালো থাকুন | School of Awareness

Friday, February 8, 2019

সৌদি আরবে 'ধর্ম ও সংস্কৃতিবিরোধী' ৫০টি নাম রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে!


সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় 'সেদেশের ধর্ম ও সংস্কৃতির বিরোধী'- এই কারণ দেখিয়ে ৫০টি নাম নিষিদ্ধ করেছে। সেদেশের অভিভাবকরা এখন থেকে তাদের সন্তানদের এসব নাম রাখতে পারবেন না।
নিষিদ্ধ নামগুলোর মধ্যে আছে আবদুল নাসের, ইমান, আবরার, আমির, নবী, নাবিয়া (নারী নবী), আবদুল মুসলেহ, আবদুল নবী, আবদুল মু'ইন, আবদুল রসুল, মালিকা, তবারক, মায়া, রাম (হিন্দু দেবতা), বিনিয়ামিন, লিন্ড, এলিস ইত্যাদি।
নিষিদ্ধ ৫০টি নামের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে সরকারের সিভিল এ্যাফেয়ার্স বিভাগ।
গালফ নিউজ পত্রিকার এক রিপোর্টে বলা হয়, এসব নাম নিষিদ্ধ করার কারণ হলো এগুলোকে 'ধর্মদ্রোহী', অনারব, অনৈসলামিক, অথবা সৌদি আরব রাজ্যের সংস্কৃতি বা ধর্মের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
সুত্র: বিবিসি বাংলা।

ভালো থাকুন | School of Awareness

Tuesday, February 5, 2019

এইসব ভুয়া কাজকর্ম থেকে বিরত থাকুন, ধর্মবিশ্বাসকে শুদ্ধ করুন!


নিজেকে প্রচারের জন্য মানুষ কত কিছুই না করে! আবার অনেকে নির্বোধের মতো না বুঝেই অন্যের কথামতো কাজ করে! আসুন জেনে নিই তেমন কিছু বিষয় যেসবের কোনো ভিত্তি নেই, অথচ আমরা না বুঝেই তা করে থাকি!

একটি মেয়ের ছবি দিয়ে লিখে দেওয়া হলো, ‘এই হিজাবি বোনটির জন্য কতগুলো লাইক হবে? সবাই লিখুন মাশাআল্লাহ'। সেই ছবিতে ‘মাশাআল্লাহ’ লেখা কমেন্টের ধুম পড়ে গেল। শেয়ারের ঝড়ে ছবিটি ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক কমিউনিটিজুড়ে। এ নিয়ে ধর্মবিরাগী অনলাইন এক্টিভিস্টরা হাসাহাসি করে মজাও নিচ্ছেন বেশ। উপহাসের পাত্র বানিয়ে দেওয়া হলো হিজাবকে। 

‘আমিন না লিখে যাবেন না’; ‘মুসলমান হলে আমিন না লিখে যাবেন না’ ‘ছুবহানাল্লাহ, আল্লাহর কী কুদরত!’ ‘এটা নবীজির পাত্র, আমিন না লিখে যাবেন না’ –এ জাতীয় লেখার সঙ্গে পরিচিত নয়, এমন ফেইসবুক ব্যবহারকারী হয়তো পাওয়া যাবে না। নাস্তিকদের পেইজ ব্লগগুলোতে ভিজিট করলে দেখা যায় তারা কী রকম মজা লুটে নেয় এই জাতীয় লেখাগুলো থেকে।

‘আমিন না লিখে যাবেন না’ –এটি বর্তমানে সবচাইতে জনপ্রিয় পোষ্টগুলোর একটি! ব্যাপারটি এমন যেন, আপনি জান্নাতে যেতে চাইলে ঘরে বসে কমেন্টে আমিন লিখলেই টিকিট কনফার্ম! অসংখ্য পেইজে, গ্রুপে, ফেসবুকে ভরপুর হয়ে গেছে এই আমিন আমিন। এদের লাইক এক দুই হাজার নয়। এদের লাইক সংখ্যা বিশ/ ত্রিশ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ পর্যন্ত। বাংলাদেশের প্রায় লক্ষ লক্ষ ফেসবুক ব্যবহারকারী এদের পাল্লায় পড়ে ভুল পথে যাচ্ছে। এরা আবার অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে মানুষের দুর্বলতম দিক, আবেগকে। ইসলামকে ব্যবহার করে এই কাজটি করছে সুনিপুনভাবে।

মূলত লাইক কমেন্ট প্রত্যাশী অতি আবেগী কিছু মানুষ মনে করছে এটাই বুঝি ইসলামের প্রচার। এমন সব ভুয়া পোস্ট দেওয়াকে তারা বর্তমানে ফেসবুকে ‘ইসলাম প্রচার’ মনে করছেন। আর অন্য সরলপ্রাণ মুসলমানগণ লাইক-কমেন্টও করেছেন। অসুস্থ বা রুগ্ন শিশুর ছবি দিয়ে লিখে দেয়, ‘আমিন না লিখে যাবেন না'; ভাবখানা এমন যে, এখানে লাইক দিলেই জান্নাত। প্রশ্ন হলো, এখানে রুগ্ন ব্যক্তির সঙ্গে আমিন বলার কী সম্পর্ক? নবীজি (স) এর পাত্র বা জামার সঙ্গে আমিন বলার কী সম্পর্ক?

ধর্ম নিয়ে ফেসবুকে ঝড় তোলা একটা দল আছে যাদের পোস্ট অনেকটা এই রকম- "আপনি কোনটি চান? কমেন্ট করুন', সেখানে একটি ফটোতে ডিভাইডার দিয়ে একপাশে টাকা পয়সা ও আরেকপাশে কুরআন এর ছবি আছে এবং অপশন দুটি '১' ও '২' দিয়ে ইনডিকেট করা আছে। আবার দেখা যায়, "যদি চান দেশে ইসলামী আইন চালু হোক 'আমিন/ হ্যা' লিখুন"।
এইসব আহাম্মকদের বলতে চাই, ফেসবুকের পোস্টে '১/২' কিংবা 'আমীন/ হ্যা' লিখলেই কি ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে? আর 'আমীন' না লিখলেই কি ইসলাম ধুলোয় মিশে যাবে? এই ভণ্ডামি বন্ধ করেন। ধর্মবিশ্বাস একটি মনের বিষয় আর বাস্তব জীবনে তা মেনে চলার বিষয়, ফেসবুকে ঝড় তুলে বাস্তবে বসে থাকার বিষয় নয়।

আবার দেখা যায়, অমুক বিষয়টি দেশে কার্যকর হোক, এটি আপনি চান কি না 'হ্যা/ না' লিখুন। আরে তুই কে এমন যে তোর ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া পোস্টে কমেন্টের 'হ্যা/ না' এর পরিমাণ হিসাব করে সরকার সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কে তুই যে তোর এই পোস্ট দিয়ে তা বাস্তবায়ন হবে?
আর যে পন্থায় কাজ করলে তা বাস্তবায়ন হবে এইসব পোস্টদাতারা তার ধারের কাছেও যায় না, শুধু ফেসবুকে ঝড় তুলে বাস্তবে নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়।
আর সবচেয়ে আবাল তারা যারা আবার সেখানে কমেন্ট করে।

এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় যে, ২/৩ দিন গবেষনা করে কোরআন হাদীস ঘেঁটে একটা বিষয় নিয়ে পোষ্ট দিলে সারা দিনেও ৫০/৬০ লাইক উঠে না, কিন্তু এই জাতীয় পোষ্ট দেওয়ার ঘন্টা খানেক এর ভিতর হাজার হাজার লাইক, কমেন্ট, শেয়ার। দিন শেষে তা লাখ ছাড়িয়ে যায়। তাই লাইক-কমেন্ট প্রত্যাশী গ্রুপ এডমিন, পেইজ এডমিনরা এই জাতীয় পোষ্টকেই বেশী পছন্দ করে থাকে। এগুলোকেই বেশি বেশি প্রচার করে থাকেন।

আসলে লাইক-কমেন্ট পাওয়ার লোভ এক ধরনের মানসিক অসুস্থতার পর্যায়ে পৌঁছেছে। তারা যেন লাইক-কমেন্টের কাঙাল। ফলে বেশি লাইক পেতে ধর্মীয় অনুভূতি আর গুজবকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, লাইক বা কমেন্ট কী মহামূল্যবান জিনিস যে মিথ্যা প্রচার করে লাইক বা কমেন্ট পেতেই হবে! কী উপকার হবে এতে? মিথ্যা কথা বলা বা মিথ্যা প্রচারের মধ্যে দিয়ে অতি সাময়িক ফায়দা লাভ হলেও মূলত এরা দীর্ঘকালীন ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন। কারণ মিথ্যা ফাঁস হয়ে গেলে মিথ্যাবাদীর জন্য বয়ে আনে মারাত্মক লাঞ্ছনা ও দুর্ভোগ। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে- দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর জন্য। (সুরা জাসিয়া ৭)।

আবার অনেক সময় পাশাপাশি কয়েকটি ধর্মীয় গ্রন্থের ছবি দিয়ে বলা হয়, ‘আপনি কোনটির সাপোর্টার?’ আবার কখনও দেখা যায়, হৃদয়ে ঝাঁকুনি দেওয়ার মতো প্রশ্ন, ‘আপনি কি মুসলমান?’ মুসলমান হলে লাইক না দিয়ে যাবেন না। আবেগী ফেসবুকাররা এখানে ধুমছে লাইক দিচ্ছেন। এগুলো ইসলাম নিয়ে ইসলামের পরিভাষা ‘আমিন’কে নিয়ে উপহাস করা ছাড়া কিছুই নয়। কখনো দেখা যায়, অশুদ্ধ বা জাল হাদিস তুলে ধরে বলা হয়, ‘লাইক দিন, যদি জান্নাতে যেতে চান'। অথচ মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করা যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেওয়া। রাসুলুল্লাহ (স) বলেন, 'যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করে, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়' (বুখারি হা/৩৪৬১)।

এখনই সময় সচেতন হয়ে এ জাতীয় পোস্ট প্রচার ও প্রসার বন্ধ করার। তা না হলে আমাদের জন্য ভবিষ্যতে অপেক্ষা করবে একটি অশিক্ষিত এবং ভুল ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত প্রজন্ম! যারা ইসলামের দাওয়াত বলতে এগুলোকেই বুঝবে। আর এক সময় নাস্তিকদের মতো তারাও হয়তো ধরে নেবে এটাই বুঝি ইসলাম এবং এটি অন্তঃসারশূন্য একটি ধর্ম!

সুতরাং, আসুন আজ হতে শপথ নেই যে, নাস্তিকদের জন্য নিজেদের ধর্মকে উপহাসের পাত্র বানাবো না। আমরা সত্যিকারে ইসলাম শিক্ষায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করি। কোন লাইক কমেন্টস বিজনেস না করে কোরআন ও হাদীসের বানীকেই কেবল প্রচার ও প্রসার করি। আশা করি এতেই আপনার ও সবার ইহকাল ও পরকালের মুক্তি অর্জিত হবে, ইনশাআল্লাহ!

এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি-
কিছু কথা বলতে চাই আবাল নাদানদের উদ্দেশ্যে যারা মাথা খাটায় না, হুজুগেই নাচে। যখন ফেসবুক ছিল না তখন দেখা যেতো মিথ্যা কাহিনী লিখে কাগজে ছাপিয়ে বলা হতো দশ দিনের মাঝে নিজ টাকায় এই পরিমাণ কপি বিলি করলে এত দিনের মধ্যে এই এই পাওয়া যাবে, আর এই ঘটনা বিশ্বাস না করলে এই এই হবে এবং এটা প্রচার না করলে এই এই হবে। এটা ছিল ইহুদিদের চালবাজি। এতে করে তারা আমাদের ঈমান অর্থাৎ বিশ্বাস নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল। জানতে চান কীভাবে? তাহলে ব্যাখ্যা করছি।

এতে দেখা যাবে যে, এই ভুয়া তথ্যকে বিশ্বাস করে সেই কাজ করার পরেও যখন তাদের লাইফে কোনো উন্নতি হবে না তখন প্রভুর উপর থেকে তাদের বিশ্বাস হারিয়ে যাবে; আর এভাবেই পাতানো ফাঁদের মাধ্যমে ইহুদিরা মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে নেমেছিল এবং মুসলিমরা না বুঝেই তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছিল।

এটা ছিল ইহুদিদের বিশেষ এক কৌশল; তারা ভালো করেই ঠাণ্ডা মাথায় আবিষ্কার করেছিল যে, নির্বোধ মুসলিমদেরকে একবার এটাতে জড়াতে পারলে তারা না বুঝেই এটা করতে থাকবে এবং এটা জ্যামিতিক হারে দ্রুত প্রসার লাভ করবে; ফলে ইসলাম ধর্ম একটি ভুয়া কাহিনীভিত্তিক লোকাচারে পরিণত হবে এবং ইসলামের আসল বিষয়বস্তু হারিয়ে যাবে, ফলে মানুষ হতাশ হয়ে ইসলাম ত্যাগ করবে।

এরপর যদিও এ বিষয়ে উলামা-মাসায়েখদের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের ফলে এটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে একই জিনিস দেখা যায় যখন বিভিন্ন সিম কোম্পানির SMS অফার আসে তখনও নির্বোধ মুসলিমরা একই কাজ SMS পদ্ধতিতে শুরু করে। সর্বশেষ ফেসবুকের যুগে আবারও নির্বোধ মুসলিমরা একই ফাঁদে পড়ে আবারো এই নির্বোধের কাজ শুরু করেছে।

সেখানে ছাপানো সেসব ঘটনার কোনো কুরআর বা হাদিসগত ভিত্তি নাই। যার কোনো কুরআন হাদিসগত ভিত্তি নাই তা অন্ধবিশ্বাস নিয়ে পালন করলেই কোনো ফল পাওয়া সম্ভব নয়। আর দেখা যাবে যখনই কেউ মনের বিশ্বাস থেকে এসব ভিত্তিহীন কাজ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে করবে কিন্তু কোনো ভালো ফল পাবে না তখনই আল্লাহর উপর থেকে তার বিশ্বাস কমে যাবে; কিন্তু ত্রুটিটা আসলে কোথায় দেখুন- সে তো করেছেই ভিত্তিহীন কাজ। সে ভিত্তিহীন ভুয়া তথ্য প্রচার করবে আর আল্লাহ তাকে ভালো ফল দেবেন?

এটা ইহুদিদের একটি ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পনা যে, যেখানে মুসলিমদের অহেতুক সময় নষ্ট করে, তাদের অনেক প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে তাদের বিশ্বাসকে ভ্রান্ত বিশ্বাসে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। দেখা যায় মুসলিমদের যেখানে অনেক সময়ই দোয়া কবুল হয় না- দোয়া কবুল না হওয়ার পেছনেও অনেক কারণ আছে, এবং সকল শর্ত মানার পরেও যেখানে দোয়া কবুল হয় না তার পেছনেও আবার আলাদা ইসলামিক ব্যাখ্যা আছে সেখানে ভুয়া কাজ অন্ধবিশ্বাস নিয়ে করে তা থেকে ফল পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।

২০০৭ সালের দিকে একজনের প্রচার করা এরকম একটি ছাপানো কাগজ হাতে পেয়েছিলাম। তাতে লেখা ছিল এই কাগজ বিলি করে একজন ব্যবসার এত টাকা লাভ করেছে, একজন স্বপ্ন দেখে মাটি খুড়ে গুপ্তধন পেয়ে কোটিপতি হয়েছে, একজন লটারি জিতে লাখোপতি হয়েছে। সেদিনই খটকা লেগেছিল আমার; ইসলামে 'লটারি'ই তো হারাম, প্রভু তাকে পুরস্কার হিসেবে লটারি জিতিয়ে দেয় কী করে? প্রভুর দেওয়া সব পুরস্কারই তো পবিত্র হয়; কিন্তু লটারি তো পবিত্র নয়, লটারি তো হারাম।
সেই কাহিনী বিশ্বাস করে আমার এক স্কুলের ক্লাসমেট ১০০০ কপি বিলি করেছিল। সে এসএসসি পাশ করতে পারে নি, এখন ছেলের বাপ- এই আর কী! তাহলে কই সে পুরস্কার পেল?

তাই আসুন, এদের এসব ফাও পোস্টে লাইক/ কমেন্ট/ শেয়ার না দিয়ে এসব ভুয়াদের প্রতিরোধ করি।
(সম্পাদিত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Wednesday, January 30, 2019

মুসলমানের বিয়েতে অনেকে এই ৭ নাজায়েজ কাজ করে, জেনে নিন কি কি ?


বর্তমান যুগেও মুসলমানদের বিয়েতে এখনও অন্তত ৭টি ইসলাম বিরোধী প্রথা চালু রয়েছে। খুব দ্রুতই প্রতিটি মুসলমানদের নিচে উল্লেখিত এই ৭টি না জায়েজ কাজ ত্যাগ করা উচিত।

১। চন্দ্র বর্ষের কোন মাসে বা কোন দিনে অথবা বর/কনের জন্ম তারিখে বা তাদের পূর্ব পুরুষের মৃত্যুর তারিখে বিয়ে-শাদী হওয়া অথবা যেকোনো শুভ সৎ কাজ করার জন্য ইসলামী শারী’য়াতে বা ইসলামী দিন তারিখের কোন বিধি নিষেধ নেই। বরং উপরিউক্ত কাজগুলো বিশেষ কোন মাসে বা যে কোন দিনে করা যাবে না মনে করাই গুনাহ।

২। বিয়ে উৎসবে অথবা অন্য যেকোনো উৎসবে পটকা-আতশবাজি ফুটান, অতিরিক্ত আলোকসজ্জা করা, রংবাজী করা বা রঙ দেয়ার ছড়াছড়ি ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ ও অপচয়।
আল্লাহু-তা’য়ালা বলেনঃ
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
“নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। আর শয়তান হচ্ছে তার প্রভুর প্রতি বড় অকৃতজ্ঞ।” (বানী ইসরাঈল-২৭)

৩। বাঁশের কুলায় চন্দন, মেহদি, হলুদ, কিছু ধান-দুর্বা ঘাস কিছু কলা, সিঁদুর ও মাটির চাটি নেয়া হয়। মাটির চাটিতে তেল নিয়ে আগুন জ্বালানো হয়। স্ত্রী ও বরের কপালে তিনবার হলুদ লাগায় এমনকি মূর্তিপূজার ন্যায় কুলাতে রাখা আগুন জ্বালানো চাটি বর-কনের মুখের সামনে ধরা হয় ও আগুনের ধোঁয়া ও কুলা হেলিয়ে-দুলিয়ে বাতাস দেয়া হয়। এসব হিন্দুয়ানী প্রথা ও অনৈসলামিক কাজ।

৪। বরের আত্মীয়রা কনেকে কোলে তুলে বাসর ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া অথবা বরের কোলে করে মুরুব্বীদের সামনে স্ত্রীর বাসরঘরে গমনের নীতি একটি বেহায়াপনা, নিরলজ্জতা ও অনৈসলামিক কাজ।

৫। বরের ভাবী ও অন্য যুবতী মেয়েরা বরকে সমস্ত শরীরে হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে দেয়া নির্লজ্জ কাজ, যা ইসলাম সমর্থন করে না। পাশাপাশি বর ও কনেকে হলুদ বা গোসল করতে নিয়ে যাওয়ার সময় মাথার ওপর বড় চাদর এর চার কোনা চার জনের ধরা হিন্দুয়ানী প্রথা।

৬। বর ও কনের মুরুব্বীদের কদমবুসি করা একটি মারাত্মক কু-প্রথা। বিয়ে তো নয় এমনকি যেকোনো সময় পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা কোন কালে প্রমাণিত নয়। কদমবুচি করার সময় সালাতের রুকু-সিজদার মত অবস্থা হয়। বেশি সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে হিন্দুয়ানী প্রনামকে প্রথা হিসেবে নিয়ে আসা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য নয়।

৭। তাছাড়া বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বরকে পিঁড়িতে বসিয়ে বা সিল-পাটাই দাঁড় করিয়ে দই-ভাত খাওয়ান ইসলামিক প্রথা নয়। পাশাপাশি বিযের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর বরকে দাঁড় করিয়ে সালাম দেয়ানোর প্রথা রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের (রাযি আল্লাহু আনহুম) দ্বারা প্রমাণিত নয়।

পরিশেষে বলতে হয়, মুসলমানরা যদি ভয়ঙ্কর এই ৭টি নাজায়েজ কাজ পরিত্যাগ না করে, তাহলে কাল কিয়ামতের ময়দানে তাদের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। তাই দ্রুতই যেন আমরা সবাই সকল নাজায়েজ কাজ ত্যাগ করে দ্বীনের পথে ফিরে আসি।
(সংগৃহীত)

ভালো থাকুন | School of Awareness

Wednesday, January 23, 2019

Preface to Religion & Life


স্কুল অব অ্যাওয়ারনেস এর "ধর্ম ও জীবন" বিভাগে আমরা যেসব কাজ না বুঝেই অজ্ঞাতসারে করে ফেলি এবং ধর্মে কঠোর নিষেধ আছে সেসব সম্পর্কে জানতে পারবেন।